রিয়াজুল হক : ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন পহেলা মুহাররম। শুধু ক্যালেন্ডারের একটি তারিখ নয়, বরং ইতিহাস, ত্যাগ, আত্মশুদ্ধি ও ন্যায়ের প্রতীকে পরিণত হওয়া এক বিশেষ সময়চিহ্ন হচ্ছে পহেলা মুহাররম। এই দিন থেকে শুরু হয় মুসলিম জীবনের নতুন যাত্রা।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে হিজরি সনের সূচনা হয়। এটি শুধু ভৌগোলিক স্হানান্তর ছিল না, বরং এটি এক আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণের সূচনা ছিল। এই হিজরত ছিল অন্যায়, নিপীড়ন ও অন্ধকার থেকে আলো, ন্যায় ও মানবিকতার পথে ফেলা প্রারম্ভিক পদক্ষেপ।
খলিফা হজরত উমর (রা.) এর শাসনামলে হিজরি বর্ষপঞ্জি প্রবর্তন করা হয় এবং হিজরতকে ইসলামী বর্ষপঞ্জির সূচনা বিন্দু হিসেবে গ্রহণ করা হয়। চারটি পবিত্র মাসের একটি হচ্ছে মুহাররম মাস। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, তার মধ্যে চারটি সম্মানিত মাস।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৬)
মুহাররম মাসে হানাহানি, রক্তপাত নিষিদ্ধ। বরং এটি আত্মশুদ্ধি, রোজা ও ইবাদতের জন্য এক অনন্য সময়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রমজান মাসের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা।’ (সহিহ মুসলিম, ১১৬৩)
ইসলামী নববর্ষে আমরা সাধারণত আলোকসজ্জা করি না, উৎসব পালন করি না। তবে মুমিনের জন্য এটি হতে পারে আত্মমূল্যায়নের সময়। কিভাবে? বিগত বছরের হিসাব চুকিয়ে দেওয়ার এবং নতুন বছরের ইবাদতের দিকে মনোযোগী হওয়ার। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে সময়টাকে ভালো কাজে ব্যয় করা উচিত।
সময় বহমান এবং এক মুহূর্তের জন্যেও থেমে থাকেনা। পহেলা মুহাররম আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন ক্ষণস্হায়ী। এই দিনে নতুন করে আল্লাহর পথে ফিরে আসার প্রতিজ্ঞা করা উচিত। পহেলা মুহাররম হোক আমাদের হৃদয়ের পুনর্জাগরণ, আত্মার পরিশুদ্ধির দিন। কারণ নতুন বছরই নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে।
লেখক : রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
রিপোর্টার্স২৪/ঝুম