বিশেষ প্রতিনিধি, রিয়াদ হাসান।।

স্টাফ রিপোর্টার : ঈদে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যাত্রী কল্যাণ সমিতি ১২ দফা সুপারিশ করেছে। সুপারিশসমূহ- 

মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা আমদানী ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য সড়কগুলোতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ ও যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে ফুটপাতসহ সার্ভিস লেইনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা এবং চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা এবং রোড সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা; সারা দেশে উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত নিশ্চিত করা এবং নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা; মেয়াদ উত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেস বিহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া; ঈদের আগে ঈদের ছুটি ৪ দিন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে ও ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী চালকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাট ও আয়কর অব্যাহতি দিতে হবে।

সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহায় সারা দেশে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ও ১ হাজার ১৮২ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে। 

নৌ-পথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৪১৫টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও ১ হাজার ১৯৪ জন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে দেশের সড়ক-মহাসড়কের ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সব গর্তে বেপরোয়া যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। 

ঈদের পরে বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালাতে গিয়ে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ সব  দুর্ঘটনার সিংহভাগই খাদে পড়ে ও দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লেগে ঘটেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত ও ১৪৮ জন আহত হয়েছে, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৬১ জন চালক, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৮ জন পথচারী, ৪০ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫ জন শিক্ষক, ১ জন চিকিৎসক, ০১ জন প্রকৌশলী ও ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। 

এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০ দশমিক ৭৯  শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতির অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ, সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ ও ড্রাইভারস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. বাদল আহমেদ ও জি এম মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

রিপোর্টার্স২৪/আরএইচ